ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১

উদ্বোধনের অপেক্ষায় দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ পরিবেশ বান্ধব ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা।

নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৩, ০১:২১ দুপুর  

ছবি সংগৃহিত

উদ্বোধনের অপেক্ষায় দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ পরিবেশ বান্ধব ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা। নির্ধারিত সময়েরতিন মাস আগেই আগামী অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার কারখানাটির উৎপাদন উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। ইতিমধ্যেপ্রকল্পটির ৯৫ ভাগ কাজ বাস্তবায়ন হয়েছে বলে জানান কর্তৃপক্ষ।

 

দেশে ইউরিয়া সারের উৎপাদন বাড়াতে নরসিংদীর পলাশে নির্মিত হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ সার কারখানাটি।সরকারের মেগা প্রকল্পের মধ্যে এটি একটি অন্যতম।

 

ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা প্রজেক্টে দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা হবে হাজার ৮০০ মেট্রিক টন সার। আর বছরেউৎপাদন হবে লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন। সার কারখানাটি উৎপাদনে আসলে বিদেশ থেকে সার আমদানির উপরনির্ভরশীলতা কমে আসবে এবং প্রান্তিক কৃষকরা কম দামে সার কিনতে পারবে।

 

সার কারখানা সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে ২০২০ সালের ১০ মার্চ। শেষ হওয়ার সম্ভাব্য তারিখ ধরাহয়েছিল ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে। নির্ধারিত সময়ের তিন মাস আগেই উৎপাদনে যাচ্ছে বলে জানান কর্তৃপক্ষ।কারখানাটিউৎপাদনে এলে এখান থেকে পাওয়া যাবে বছরে লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার। আমদানি নির্ভরতা কমে ভাগের ভাগে নেমে আসবে। বছরে সাশ্রয় হবে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা। আধুনিক আর পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তিতে নির্মাণ করা হচ্ছেকারখানাটি। যাতে খরচ হবে সারে ১০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের হাজার ৮শ কোটি টাকা। বাকিটাকা আসবে নির্মাতা দুই প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ঋণ হিসেবে। কারখানাটি যৌথভাবে নির্মাণ করছে জাপানের মিটসুভিসি হেবিইন্ডাস্ট্রিজ চায়না প্রতিষ্ঠান সিসি সেভেন।

ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়ার ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরির প্রকল্প পরিচালক রাজিউর রহমান মল্লিক বলেন, আমরা কোভিডের মধ্যেওকাজ করতে পেরেছি। তাই নির্ধারিত সময়ের তিন মাস আগেই অক্টোবরের শেষ দিকে সার উৎপাদন করতে পারব।

 

সূত্রে আরও জানা যায়, সার কারখানাটি নির্মাণে বিশ্বের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলোবাংলাদেশে যত সার কারখানা আছে তাতে কার্বন ডাই-অক্সাইড অর্থাৎ যে গ্যাসটা পরিবেশকে দূষিত করে, সেই গ্যাস আকাশেছেড়ে দেওয়া হয়। শুধু সার কারখানা নয়, দেশের সবগুলো পাওয়ার প্লান্টেও এই দূষিত গ্যাসগুলো আকাশে ছেড়ে দেওয়া হয়।কিন্তু এটিই বাংলাদেশের প্রথম সার কারখানা হবে, যেখানে দূষিত গ্যাসগুলো আকাশে ছেড়ে না দিয়ে তা ধরে প্রজেক্ট প্রসেসেরমধ্যে এনে অতিরিক্ত ১০ ভাগ ইউরিয়া সার উৎপাদন করা হবে। সম্মিলিতভাবে লেটেস্ট টেকনোলজি ব্যবহার করার প্রেক্ষিতেইপ্রতিদিন হাজার ৮শ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার তৈরি করা হবে। আগে যেখানে (ফিল) ইউরিয়া অর্থাৎ ছোট ছোট দানা ব্যবহারকরা হতো, এখন বড় বড় দানা ব্যবহার করা হবে। কারণ বড় দানার ইউরিয়া সার পরিবেশ বান্ধব। ছোটগুলো এখন আরপৃথিবীতে নেই। কারণ এটা পরিবেশকে দূষিত করে।

দেশি এবং বিদেশি শ্রমিক সব মিলিয়ে একসঙ্গে প্রায় হাজার শ্রমিক কাজ করছে। বর্তমানে সরকারকে ইউরিয়া সার আমদানিতেপ্রতি বছর হাজার ৬০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়, এটি উৎপাদনে আসলে আর তা দিতে হবে না।

বাংলাদেশে বছরে ২৫ লাখ টন ইউরিয়া সারের প্রয়োজন হলেও এটি উৎপাদনে আসলে ২০ লাখ টন পাওয়া যাবে। আর বাকি লাখ টন বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে। মোট কথা ৮০ ভাগ দেশে উৎপাদন আর ২০ ভাগ বিদেশ থেকে আনতে হবে।কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে ৯৬৮ জন স্থায়ীসহ প্রায় ৩০ হাজার মানুষের।