অবরোধের কারণে নষ্ট হচ্ছে শাকসবজি
প্রকাশিত: নভেম্বর ০৬, ২০২৩, ০২:০৫ দুপুর
ছবি সংগৃহিত
অবরোধের কারণে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। বিক্রি করতে পারছেন না ফসল। টানা অবরোধে নষ্ট হচ্ছে তাদের উৎপাদিত শাকসবজি।
চাষি ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, এক দিনে পণ্য পরিবহনের খরচ বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ, যা সরাসরি প্রভাব ফেলেছে পণ্যের দামে। অবরোধের কারণে পরিবহনের খরচ বেড়ে যাওয়ায় কেউ শাকসবজি কিনছে না। ঢাকা থেকে আসছেন না পাইকারি ব্যবসায়ীরা। ফলে প্রভাব পড়েছে জীবনযাপনে।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, যেখানে পণ্য পরিবহনে আগে দিনে ২০টি গাড়ি চলতো, বর্তমানে তা ১০ থেকে ১২টিতে নেমে এসেছে। কিছুদিন আগেও পেঁয়াজ আলু কিছুটা বাড়তি দামে বিক্রি হলেও ২ নভেম্বর থেকে কমতে শুরু করেছে।ইদানীং শাকের চাহিদা কিছুটা কম কিন্তু আমদানি বেশিতারা জানান, কিছুদিন আগেও শাকসবজির দাম বাড়তি ছিল। গত দুই দিনে অর্ধেকে নেমে এসেছে। বাজারে শাকসবজির সরবরাহ বেশি। কিন্তু অবরোধের কারণে ঢাকা ও আশপাশের এলাকা থেকে পাইকাররা আসছেন না।
আরও পড়ুনঃ গাছ কেটে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ফেলে অবরোধ
শ্রীপুর উপজেলর তেলিহাটি ইউনিয়নের টেপিরবাড়ী গ্রামের কৃষক আল অমীন বলেন, ইদানীং শাকের চাহিদা কিছুটা কম কিন্তু আমদানি বেশি। আগে এক কেজি লালশাক বিক্রি করেছি ৬০ টাকায়। এখন তা কমে এসে দাঁড়িয়েছে ২০ টাকায়। বর্তমানে যে দাম পাওয়া যাচ্ছে, তা দিয়ে পোষাচ্ছে না। আগে দাম বেশি ছিল। এসব কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত।
পাইকারি বিক্রেতা সুলতান উদ্দিন বলেন, কলমিশাক আগে বিক্রি হতো ৩০ টাকা কেজি দরে। এখন বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা কেজি দরে। অবরোধের আগের দিন থেকে দাম কমেছে। এ মৌসুমে শাকসবজির আমদানি বেশি এবং চাহিদা কমে যাওয়ায় দামে ভাটা পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, এখানে কাঁচামালের সব ধরনের সবজি শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তা কাঁচামালের আড়তে আসে। আশপাশের ১০ থেকে ৩০ কিলোমিটার দূর এমনকি বিভিন্ন জেলা থেকেও আসে। অবরোধে আমরা বিভিন্ন জেলায় স্থানীয় পণ্য পাঠাই। আগে ৮ থেকে ১০টি গাড়ি মালামাল পাঠনো হতো, এখন ৫ থেকে ৭টি গাড়ি মালামাল পাঠানো হয়। আগে একটা গাড়ি ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকায় পণ্য পরিবহন করতো। অবরোধের কারণে এখন তা আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা বেড়েছে।
আগে একেক আড়তে দিনে বিক্রি হতো দুই থেকে তিন লাখ টাকা জানিয়ে তিনি বলেন, এখন অবরোধের সময় বিক্রি হচ্ছে দেড় থেকে ২ লাখ টাকা। কমপক্ষে ২০০ আড়তদার রয়েছেন এখানে। প্রতি আড়তে অন্তত ১০ জন করে বিক্রেতা রয়েছেন।
আড়ত মালিক নাজমুল হাসান বলেন, রাজনৈতিক অন্দোলন কর্মসূচিতে দাম বাড়ার কথা ছিল। কিন্তু তা না হয়ে এর উল্টো হয়েছে। কাঁচা মালামাল নষ্ট হচ্ছে। রাজনৈতিক কর্মসূচি না থাকলে পেঁয়াজ আলুর দাম আরও কমে যেতো। এমনও হতে পারে দাম বাড়ার কারণে অনেকে পোঁয়াজ-আলু কেনা থেকে বিরত রয়েছেন। চাহিদা কমে যাওয়ায় দাম এখন নিম্নমুখী।
আড়ত মালিক জসীম উদ্দিন বলেন, বাজারে পণ্যের দাম গত বছরে তুলনায় খুব বেশি নয়। কিন্তু অবরোধের কারণে পণ্য পরিবহন ভাড়া কিছুটা বেশি। ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে পণ্যের পাইকারি ও খুচরা বাজারে। ৯০ টাকা কেজির করলা এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়।
২৪ ঘন্টা আপডেট নিউজ পেতে bdtribune24/বিডিট্রিবিউন২৪ এর ফেসবুক পেজ ফলো করুন
পেঁয়াজ ও আলুর আড়ত ম্যানেজার সকিুল ইসলাম বলেন, নভেম্বরের প্রথম দিনেও পেঁয়াজ বিক্রি করেছি ১২০ টাকা কেজিতে। ৪ নভেম্বর তা বিক্রি করছি ৯০ টাকা কেজিতে। পেঁয়াজ আলুর দামের ক্ষেত্রে অবরোধ তেমন কোনও প্রভাব ফেলতে পারেনি। তবে পণ্য পরিবহনে ভাড়া দুই থেকে তিন হাজার টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে। ঝুঁকি নিরাপত্তার কথা বলে পরিবহনমালিকরা বাড়তি ভাড়া নিচ্ছেন।
সাতক্ষীরা জেলার ভোমড়া স্থলবন্দর থেকে পেঁয়াজ নিয়ে আসা ট্রাকচালক স্বপন মিয়া বলেন, অবরোধে যেকোনও ধরনের বিপদ হতে পারে। এক দিনের পণ্য পরিবহনে সময় লাগছে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা বেশি। এসব কারণে পরিবহনমালিকরা দুই-তিন হাজার টাকা বাড়তি ঝুঁকি ভাড়া নিচ্ছেন। তবে আমরা পণ্য পরিবহন বন্ধ রাখিনি।