ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বর্ণবাদবিরোধী কিংবদন্তি নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা

নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৩, ০৫:১২ সকাল  

নেলসন ম্যান্ডেলা এই নামটির কোনো ভূমিকার প্রয়োজন নেই। তিনিই একমাত্র লোক যিনি এককভাবে দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবৈষম্যের সাথে লড়ে তা ধ্বংস করেছিলেন। নেলসন রোলিহ্লাহ্লা ম্যান্ডেলা (ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম রাষ্ট্রপতি। তিনি ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। নোবল শান্তি পুরস্কার জয় করলেও তিনি স্বাধীনতা পাওয়ার জন্য আসলে হিংসাত্মক উপায় অবলম্বন করেছিলেন। আফ্রিকানদের অধিকার জয়ের যুদ্ধে প্রায় ৩ দশক তিনি জেলের মধ্যেই কাটিয়েছেন এবং জেলখানাতেই তিনি আইনে স্নাতক হন।

নেলসন ম্যান্ডেলার জীবন সম্পর্কে জানার আগ্রহের মানুষের শেষ নেই আসুন জেনে নেই তার সম্পর্কে অজানা এবং অবাক করা কিছু তথ্য

 আসল নাম

নেলসন ম্যান্ডেলার আসল নাম রোলিলাহলা ম্যান্ডেলা, জোসা ভাষায় যার অর্থ গাছের ডাল ভাঙা। যার আরেকটি মানে উত্তেজনা সৃষ্টিকারক। তার নাম পরিবর্তন করার পরেও দেখা গেল যে তিনি সেই ইংরেজদের উত্তেজনার কারণ হয়েই রয়ে গেলেন।

ছদ্মবেশী নেলসন ম্যান্ডেলা

তিনি জেলখানায় তার জীবনের ২৭ বছর অতিবাহিত করেছিলেন এবং ছদ্মবেশে তাকে কেউ টেক্কা দেয়ার মতো ছিল না সে সময়। ১৯৬২ সালে যখন তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তখন তিনি ড্রাইভারের ছদ্মবেশে ছিলেন।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার প্রধান উদ্দেশ্য

একজন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল, সাদা এবং কালো মানুষদের মধ্যে সম্পর্ক উন্নত করা, বিশ্বের কাছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে একেবারে নতুন রূপে গড়ে তোলা।

নেলসন ম্যান্ডেলা আন্তর্জাতিক দিবস

২০০১ সালে প্রস্টেট ক্যান্সারের চিকিৎসার পর তিনি অন্যান্য ব্যাধিতে ভুগতে শুরু করেন, আর তাই তার জনসাধারণের সামনে উপস্থিতি কমে যায়। গণতন্ত্র, সামাজিক ন্যায়বিচার, স্বাধীনতা ও মানবাধিকার অবদানের জন্য ১৮ জুলাই দিনটিকে ইউনাইটেড নেশনস দ্বারা "নেলসন ম্যান্ডেলা আন্তর্জাতিক দিবস" হিসাবে মনোনীত করা হয়।

সন্ত্রাসী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত

জাতিবিদ্বেষের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহের কারণে নেলসন এবং তার দল আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস এর সদস্যদের নাম প্রায় ২০০৮ সাল পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিলো।

ম্যান্ডেলার হাতের ছাপ

আপনাদের কি জানা আছে যে ম্যান্ডেলার হাতের ছাপ অবিকল আফ্রিকান মহাদেশের আকৃতির মতো। হ্যা এটা একেবারে সত্যি ঘটনা!

গ্রেপ্তার ও রিভোনিয়ার মামলা

প্রায় ১৭ মাস ধরে ফেরারি থাকার পর ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দের ৫ অগাস্ট ম্যান্ডেলাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে জোহানেসবার্গের দুর্গে আটক রাখা হয়।মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ ম্যান্ডেলার গতিবিধি ও ছদ্মবেশ সম্পর্কে দক্ষিণ আফ্রিকার নিরাপত্তা পুলিশকে জানিয়ে দেয়, ফলে ম্যান্ডেলা ধরা পড়েন। তিন দিন পর তাকে ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে শ্রমিক ধর্মঘটে নেতৃত্ব দেওয়া এবং বেআইনিভাবে দেশের বাইরে যাওয়ার অভিযোগে তাকে অভিযুক্ত করা হয়। ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ অক্টোবর ম্যান্ডেলাকে এই দুই অভিযোগে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। এর দু-বছর পর ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দের ১১ জুন ম্যান্ডেলার বিরুদ্ধে এএনসি-র সশস্ত্র সংগ্রামে নেতৃত্বদানের অভিযোগ আনা হয় ও শাস্তি দেওয়া হয়।

প্রথম বিয়ে

ম্যান্ডেলার প্রথম স্ত্রী ছিলেন ইভিলিন ন্‌তোকো মাসে। ম্যান্ডেলার মতোই তারও বাড়ি ছিল ট্রান্সকেই অঞ্চলে। জোহানেসবার্গে তাদের দুজনের পরিচয় হয়।১৩ বছর সংসার করার পর ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। ম্যান্ডেলার অনুপস্থিতি এবং সংসার ফেলে রাজনৈতিক আন্দোলনে ম্যান্ডেলার বেশি সময় দেওয়াই ছিলো এই বিয়ে ভাঙার কারণ।